ফুটবল শুধু ইউরোপ বা দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—চলমান সময়ে এশিয়ার ফুটবলের প্রভাব এবং জনপ্রিয়তা পৃথিবীর প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়েছে। বহু দশক ধরে এশিয়া এমন সব প্রতিভাবান খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে যারা ক্লাব এবং জাতীয় দলের জার্সিতে বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। তাদের মধ্যে কেউ ইউরোপের বৃহত্তম ক্লাবগুলোতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, কেউ আবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল এবং রেকর্ডের মাধ্যমে ভক্তদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। এই তালিকার উদ্দেশ্য হলো সেই কিংবদন্তিদের তুলে ধরা, যারা সত্যিকার অর্থে Greatest Asian Footballer হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন।
এখন চলুন কাউন্টডাউন আকারে দেখে নেওয়া যাক—এশিয়ার ফুটবল ইতিহাসের Top 5 Greatest Asian Footballer in History.
5. Park Ji-sung (South Korea)

পার্ক জি-সাং এমন একটি নাম যা শুধু দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলে নয়, পুরো এশিয়া মহাদেশে অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশ্বের সেরা কোচদের মধ্যে অন্যতম স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের কথায়, “Park is a big-game player”—এই মন্তব্যই বলে দেয় তিনি কতটা মূল্যবান ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য। তাঁর ক্যারিয়ার প্রমাণ করে যে এশিয়ার একজন ফুটবলার কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা এবং অদম্য মানসিকতার মাধ্যমে কত উঁচু স্তরে পৌঁছাতে পারে। এশিয়ান ফুটবলারদের সম্মান বাড়াতে তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত পথপ্রদর্শক, যাঁকে যুক্ত করা যায় Greatest Asian Footballer শ্রেণিতে।
পার্ক জি-সাং মূলত পরিচিত তাঁর অবিশ্বাস্য ওয়ার্ক-রেট এবং বহুমুখী খেলাধুলার ক্ষমতার জন্য। তিনি কখনোই অতিরিক্ত চমকপ্রদ বা চোখধাঁধানো দক্ষতার ওপর নির্ভর করতেন না; বরং বুদ্ধিমত্তা, গতি, কৌশল এবং সতীর্থদের সাপোর্ট—সবকিছুর সমন্বয়ে তিনি নিজেকে ‘কোচের স্বপ্ন’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। ইউরোপে তাঁর পথচলা শুরু PSV Eindhoven থেকে, যেখানে তিনি দ্রুতই নজর কাড়েন। এরপর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর কেরিয়ার নতুন উচ্চতা স্পর্শ করে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন পার্ক ছিলেন বড় ম্যাচের স্পেশালিস্ট। চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো উচ্চচাপের ম্যাচে তাঁকে প্রায়ই প্রথম একাদশে দেখা যেত। তাঁর দৌড়ানোর ক্ষমতা, প্রতিপক্ষকে প্রেস করা, মিডফিল্ডে জায়গা তৈরি করা এবং রক্ষণে অবদান—সবকিছু মিলিয়ে তিনি ছিলেন দলের এক অমূল্য সম্পদ। উল্লেখযোগ্য হলো, তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী প্রথম এশিয়ান ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম, যা তাঁর নামকে আরও উজ্জ্বল করেছে।
জাতীয় দলের জার্সিতে পার্ক জি-সাং সমান উজ্জ্বল ছিলেন। তিনটি বিশ্বকাপে (২০০২, ২০০৬, ২০১০) গোল করা—এশিয়ার খুব কম ফুটবলারের পক্ষেই সম্ভব হয়ে উঠেছে। কোরিয়ার বিশ্বকাপ সাফল্যে, বিশেষ করে ২০০২ সালের সেমিফাইনাল পর্বে পৌঁছানোর যাত্রায় তাঁর অবদান ছিল অসাধারণ। সেই টুর্নামেন্টেই তিনি এমন গোল করেছিলেন যা ভক্তরা আজও ভুলতে পারে না।
পার্ক জি-সাং-এর ক্যারিয়ার শুধুই সাফল্যে ভরা নয়, তার সাথে যুক্ত রয়েছে এশিয়ান ফুটবলের মান বাড়ানোর লড়াই। তিনি দেখিয়েছেন যে এশিয়ান ফুটবলারদের জন্য ইউরোপে নিজেদের প্রমাণ করা শুধু সম্ভব নয়, বরং তারা ইউরোপের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়দের সাথে প্রতিযোগিতাও করতে পারে। এবং ঠিক এই কারণেই তিনি যথাযথভাবে স্থান পান Greatest Asian Footballer তালিকায়। তাঁর সফল যাত্রা নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য এক অনুপ্রেরণা হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
4. Paulino Alcantara (Philippines)

পলিনো আলকানতারা নামটি অনেক তরুণ ভক্তের কাছে নতুন শোনালেও, তিনি ছিলেন FC Barcelona–র ইতিহাসের প্রথম দিকের এক মহাতারকা। তাঁর জন্ম ফিলিপাইনের Iloilo শহরে। এমন সময়ে তিনি ফুটবল খেলতেন, যখন খেলাটি এখনও বিশ্বব্যাপী পেশাদার কাঠামোর মধ্যে ঢুকে পড়েনি। তবুও, তাঁর খেলায় ছিল এমন এক অনন্য জাদু, যা তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব FC Barcelona–র কেন্দ্রে। ইতিহাসে তিনিই প্রথম এশিয়ান, যিনি এত ছোট বয়সে এমন বিশ্বমানের ক্লাবে নিজের জায়গা পাকা করেছিলেন। এজন্যই তিনি নিশ্চিতভাবে গণ্য হন Greatest Asian Footballer–দের একজন।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে বার্সেলোনার হয়ে তাঁর অভিষেক হয় এবং প্রথম ম্যাচেই তিনি হ্যাটট্রিক করেন—যা ফুটবল ইতিহাসে একটি বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর খেলায় ছিল নৈপুণ্য, শক্তি, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং গোল করার অদ্ভুত ক্ষমতা। পুরো ক্যারিয়ারে তিনি বার্সেলোনার হয়ে ৩৯৯ ম্যাচে ৩৯৫ গোল করেছেন—একটি রেকর্ড যা শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে অটুট ছিল। এই রেকর্ড এতটাই অসাধারণ যে বহু বার্সেলোনা কিংবদন্তি মেসি কিংবা রোনালদিনিয়োর আগেও তাঁর নাম সর্বকালের সেরাদের তালিকায় ছিল।
খেলার শক্তির কারণে তাঁকে বলা হতো “El Romperedes”—অর্থাৎ ‘জালের ভেদকারী’। বলা হয়, এক ম্যাচে তাঁর শট এত শক্তিশালী ছিল যে বল জাল ছিঁড়ে সরাসরি ভেতর দিয়ে চলে যায়। সেসময়কার প্রযুক্তি বা সুরক্ষা ব্যবস্থা মোটেও আধুনিক ছিল না, ফলে এমন ঘটনা সত্যিই দর্শক ও গণমাধ্যমকে অবাক করত।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি আরেকটি বিরল অর্জন করেছিলেন—তিনি দুইটি জাতীয় দলে খেলেছেন। স্পেন ও ফিলিপাইন্স—দুই দেশের জার্সিতেই তাঁকে দেখা গেছে, যা দেখায় তাঁর প্রতিভার ব্যাপ্তি কতটা বিশাল ছিল।
এশিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে তাঁর গুরুত্ব বিশাল। তিনি সেই সময়ে ইউরোপে এশিয়ানদের প্রতিনিধিত্ব করতেন, যখন এশিয়ান ফুটবলার সম্পর্কে ধারণা প্রায়ই ছিল সীমিত। তাঁর অসাধারণ গোল, প্রভাব এবং অবদানের কারণে তাঁর নাম ইতিহাসে চিরকাল থেকে যাবে Greatest Asian Footballer তালিকার অন্যতম শীর্ষ স্থানে। তাঁর পথ অনুসরণ করেই পরবর্তী প্রজন্ম ইউরোপে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে অনুপ্রেরণা পেয়েছে।
Also Read:
- Top 5 Most Aggressive Footballers in the History of the Game
- Top 5 Footballers With the Most Expensive Cars in 2025
- Top 5 Most Successful Football Clubs in the World
3. Sunil Chhetri (India)

সুনীল ছেত্রী ভারতের ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি। তিনি শুধু ভারতের নয়, পুরো এশিয়ার অন্যতম গোলদাতা আইকন হিসেবে বিবেচিত হন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁর গোলসংখ্যা এতই উচ্চ যে তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসির ঠিক পিছনেই অবস্থান করেন—এটা শুধু ভারত নয়, এশিয়ার জন্য বিশাল গৌরব। তাঁর কেরিয়ার, সাফল্য, অনুপ্রেরণা—সব মিলিয়ে তিনি পরিষ্কারভাবেই যোগ্য Greatest Asian Footballer শ্রেণিতে।
ছেত্রীর জন্ম এক ক্রীড়াবিদ পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই তিনি ফুটবলের প্রতি গভীর অনুরাগ দেখিয়েছেন। তাঁর কেরিয়ার শুরু হয় ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহনবাগান থেকে। এরপর তিনি খেলেছেন Dempo SC, Bengaluru FC সহ বিভিন্ন ক্লাবে। ইউরোপ এবং আমেরিকায়ও তাঁর ছোট্ট সময়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যদিও সফলতা তিনি সবচেয়ে বেশি অর্জন করেছেন ভারতীয় ফুটবলে।
ভারতীয় জাতীয় দলে তিনি দুই দশক ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর বুট থেকে এসেছে ৯০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক গোল। শুধু গোল নয়, তিনি দলের মানসিকতা বদলে দিয়েছেন, নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন এবং ভারতীয় ফুটবলকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারত SAFF Championship, Intercontinental Cup সহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সফলতা অর্জন করেছে।
ছেত্রীর সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তাঁর ধারাবাহিকতা। ২০ বছর ধরে একই মান বজায় রাখা—এটা খুব কম ফুটবলারের পক্ষেই সম্ভব হয়। গতি, ফিনিশিং, পজিশন সেন্স এবং মাঠে চোখ—সব ক্ষেত্রে তিনি প্রায় নিখুঁত। তাঁর ফুটবল IQ এতই উন্নত যে ছোট ভুলকেও তিনি বড় সুযোগে পরিণত করতে পারেন।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL)-এর জনপ্রিয়তা এবং সাফল্যে ছেত্রী বিশাল ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বেঙ্গালুরু এফসি ভারতীয় ফুটবলে আধিপত্য করেছে এবং অসংখ্য তরুণ ফুটবলার তাঁর আদর্শ অনুসরণ করতে শুরু করেছে।
সুনীল ছেত্রী শুধু মাঠেই নন, মাঠের বাইরেও ভারতীয় ফুটবলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি নিজের ক্যারিয়ার, শৃঙ্খলা এবং মানসিক দৃঢ়তার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একজন এশিয়ান খেলোয়াড়ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের শীর্ষে উঠতে পারে। এজন্যই তিনি নিঃসন্দেহে গণ্য হন Greatest Asian Footballer–দের মধ্যে।
2. Cha Bum-kun (South Korea)

চা বুম-কুন ছিলেন এশিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং গতিশীল খেলোয়াড়দের একজন। তাঁকে বলা হতো “এশিয়ান বোমা”—তাঁর গতি, শক্তি, দৌড় এবং গোল করার ক্ষমতা এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে ইউরোপীয় ফুটবল তাঁকে ভিন্ন চোখে দেখত। তাঁর যুগে এশিয়ান ফুটবলারদের সম্পর্কে ধারণা খুব একটা শক্তিশালী ছিল না। কিন্তু চা বুম-কুন এমন সব পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন, যা দেখিয়েছে যে এশিয়ান খেলোয়াড়রাও ইউরোপে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে। এজন্যই তিনি স্থান পান Greatest Asian Footballer তালিকায়।
তাঁর ইউরোপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল এশিয়ান ফুটবলের জন্য এক বড় মাইলফলক। তিনি জার্মানির বুন্দেসলিগায় খেলেছেন—একটি লিগ যা শারীরিক শক্তি এবং গতি দাবি করে। Eintracht Frankfurt এবং Bayer Leverkusen—দুই ক্লাবেই তিনি অসাধারণ সাফল্য পেয়েছেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি দুই ক্লাবের হয়ে UEFA Cup জিতেছিলেন—যা সে সময়ের একজন এশিয়ান খেলোয়াড়ের জন্য প্রায় অসম্ভব একটি কৃতিত্ব ছিল।
চা বুম-কুন-এর খেলার স্টাইল ছিল অনন্য। তিনি ছিলেন শক্তিশালী, দ্রুত এবং অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। তাঁর শট ছিল প্রচণ্ড শক্তিশালী, যা গোলরক্ষকদের আতঙ্কিত করত। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে অনেক জয় এনে দিয়েছেন এবং একসময় তিনি এশিয়ার সর্বোচ্চ গোলদাতাদের একজন ছিলেন।
তাঁর সাফল্য শুধু খেলোয়াড় হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়। অবসরের পর তিনি কোচ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তিনি নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাতে সাহায্য করেছেন এবং পুরো দেশের ফুটবল সংস্কৃতিকে আধুনিক করেছেন।
চা বুম-কুন ছিলেন সেই সেতুবন্ধন, যিনি এশিয়ান ফুটবলকে ইউরোপীয় মানচিত্রের সাথে যুক্ত করেছেন। তিনি একটি যুগের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তাঁর অবদান আজও সম্মানের সাথে স্মরণ করা হয়। তাঁর নাম সর্বদা থাকবে Greatest Asian Footballer–দের শীর্ষ তালিকায়।
1. Son Heung-min (South Korea)

সন হিউং-মিন বর্তমান এশিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিশ্বের সেরা লিগগুলোর মধ্যে একটি—ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ—যেখানে প্রতি সপ্তাহে সেরা ডিফেন্ডারদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, সেখানে তিনি টানা এক দশক ধরে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন। টটেনহ্যাম হটস্পারের হয়ে তাঁর যাত্রা তাঁকে পরিণত করেছে সর্বকালের অন্যতম Greatest Asian Footballer।
২০১৫ সালে টটেনহ্যামে যোগ দেওয়ার পরই সন নিজের গতি, স্কিল, ফিনিশিং এবং দুই পায়ে গোল করার ক্ষমতা দিয়ে ভক্তদের মন জয় করে নেন। প্রিমিয়ার লিগে তাঁর ১৫০+ গোল, অসংখ্য অ্যাসিস্ট এবং ম্যাচ-উইনিং পারফরম্যান্স তাঁকে ক্লাবের ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে। ২০২১–২২ মৌসুমে তিনি প্রিমিয়ার লিগ গোল্ডেন বুট জিতে ইতিহাস তৈরি করেন—এটি প্রথমবারের মতো কোনো এশিয়ান ফুটবলার এই সম্মান লাভ করেন।
তাঁর খেলার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর নীরব কিন্তু প্রাণঘাতী দক্ষতা। তিনি মাঠে যেন কখনো চাপ অনুভব করেন না। প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে যেকোনো মুহূর্তে গোল করতে পারেন। তাঁর গতি ডিফেন্ডারদের ছিটকে দেয় এবং তাঁর কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা তাঁকে বিশ্বমানের ফুটবলারদের কাতারে তুলে ধরেছে।
জাতীয় দলের জার্সিতে সন আরও অসাধারণ। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক, এবং তাঁর নেতৃত্বে দেশ বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। তাঁর অর্জিত এশিয়ান গেমস স্বর্ণপদক তাঁর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন, যা তাঁকে বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি দেয়।
ক্লাব এবং দেশের হয়ে তাঁর অবদান, ধারাবাহিকতা এবং বৈশ্বিক স্বীকৃতি তাঁকে নিঃসন্দেহে স্থান দেয় Greatest Asian Footballer তালিকার সর্বোচ্চ শিখরে। তিনি শুধু একজন ফুটবলার নন—তিনি এশিয়ান ফুটবলের মুখপাত্র এবং নতুন প্রজন্মের স্বপ্নের প্রতীক।